অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভার নির্বাচনে বাজিমাত করেছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান এই তিন রাজ্যেই গেরুয়া শিবিরের জয় হয়েছে। অপরদিকে শুধু তেলেঙ্গানায় জিতেছে কংগ্রেস। চার রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলের ওপর অনেকটাই নির্ভর করেছিল জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ। ফলাফলে দেখা গেল, কংগ্রেসকে রীতিমতো টেক্কা দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি রাজ্যেই সহজ জয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল।
এর আগে শুধু মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। ছত্তিসগড় ও রাজস্থানে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস পার্টি। কিন্তু এবার এই দুই রাজ্যও বিজেপির দখলে চলে গেল। মধ্যপ্রদেশে এবার কংগ্রেস বিজেপিকে পরীক্ষায় ফেলতে যাচ্ছে, ভোটের আগে এমন পূর্বাভাসই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু রোববার দুপুরের মধ্যেই সেই পূর্বাভাস মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সঙ্গে কোনো ধরণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে না পারা কংগ্রেস বরং রাজস্থান ও ছত্তিসগড়ে ক্ষমতা হারিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, মধ্যপ্রদেশে বিজেপির দখলে ১৬১ আসন, কংগ্রেসের খাতায় ৬৬ আসন। রাজস্থানে বিজেপি পেয়েছে ১১২ আসন, কংগ্রেস ৭১। ছত্তিশগড়ে বিজেপি ৫৫, কংগ্রেস পেয়েছে ৩২ আসন। অথচ এই নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা দারুণ ভাবে জেগে উঠেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানিয়েছিল, বিজেপির জয় হাসিল সহজ হবে না।
নির্বাচনী ফলাফল জানাচ্ছে কংগ্রেস পেয়েছে ৬৩ আসন, বিআরএস ৬১, বিজেপি ৮, এআইএমআইএম-এর দখলে আছে ৬ আসন। স্বভাবতই এই জয়ের পর বিপুল উচ্ছ্বাস দেখা যায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তিন রাজ্যে ছিল আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ। তা খুব সফল ভাবেই অতিক্রম করেছে বিজেপি।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বই যে মোড় ঘুরিয়েছে, এমনটাই মত তাবড় বিজেপি নেতাদের। অপরদিকে তুষ্টিকরণ ও ভেদাভদের রাজনীতির বিপক্ষেই রায় দিয়েছে মানুষ, মত অমিত শাহের। তিন রাজ্যের জনতাকে প্রমাণ জানিয়েছেন তিনি। মানুষ কেবল সুশাসন ও উন্নয়নের রাজনীতিতেই ভরসা করে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিন রাজ্যের ভোটে বিপুল জয়, চব্বিশে বিজেপির জয়ের গ্যারান্টি দিয়ে দিল। তিন রাজ্যে জয়ের পর এক ভাষণে এমনই প্রত্যয়ী কথা শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে। বিজেপির জয় শুধু দলীয় জয় নয় বরং দেশের গরিব মানুষ, নারী, যুবক প্রত্যেকেরই। এভাবেই রাজনৈতিক জয়কে মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নেন মোদী।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করে বিজেপিই মানুষের জন্য কাজ করে। নতুন ভারতের রূপরেখা তুলে ধরে চার জাতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। তা হলো, নারীশক্তি, যুবশক্তি, কৃষক এবং গরিব বা দরিদ্র। এই চার জাতিই দেশের শক্তি। দেশের নারীশক্তি যে পূর্ণভাবে বিজেপিকে সমর্থন করেছে এমনটাই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীতেও নারীশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবে বিজেপি। এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারে যে মোদী গ্যারান্টির কথা টেনেছিলেন তিনি এদিনও তার মুখে শোনা গেল সেই কথা। স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, তিনি যা বলছেন তা শুধু প্রতিশ্রুতি নয়। তা যে পূরণ হবে সে গ্যারান্টি দিচ্ছেন তিনি। যে ‘মোদী গ্যারান্টি’তে ভরসা রেখেছেন তিন রাজ্যের মানুষ। তিনি বলেন, দেশের যুবশক্তি শুধু উন্নয়নই চায়। আর তাই যেখানে সরকার যুবকদের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে কাজ করেছে, সেখানে মানুষ সেই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মোদীর দাবি, কংগ্রেসের নীতির জন্য দশকের পর দশক বঞ্চিত ছিল আদিবাসীরা। তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের কাজ করবে বিজেপি। সেবা ও সুশাসনের নতুন মডেল দেশের সামনে তুলে ধরেছে বিজেপি। দুর্নীতিকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষ এই জয়ে কংগ্রেসকে বড় শিক্ষা দিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
Leave a Reply